Thursday, September 29, 2016

স্বপ্নসময়ের উপাখ্যান

তাসমানিয়ার বাঘ বিলুপ্ত।ইউরোপীয় সেটলার্সদের দৌরাত্ম্যে। সেই সাথে বিলুপ্তির পথেই ছিল অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী জনগণ। অবতরণের প্রথম একশ বছরেই পশ্চিমা রোগ-মারী আর অস্ত্রের আঘাতে শতকরা নব্বই ভাগ উধাও। কোথায়? ইউরোপের স্বপ্নে। এখন অবশ্য সরকার দাবি করে তারা ক্ষতিপূরণ দেবে। জুতা মেরে গরুদান! কিসের মধ্যে কি! আমরা বৃটিশদেরকে ধন্যবাদ দিতে পারি এ জন্যে যে ভারতে তারা এ কান্ডটি ঘটায় নি। প্রায় একই সময়ের কথা এগুলি।


পশ্চিম আমাদের সভ্যতা শেখায়, বিজ্ঞান শেখায়, মানদন্ড শেখায়, আমরা শিখি। Terra Nullius এর অজুহাতে নতুন দেশ দখল করে তার আদিবাসীদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ান, আমেরিকান ইত্যাদি ইত্যাদি।  


কিন্তু ইতিহাস? সভ্যতাকে বলা যেতে পারে পৃথিবীকে চিনতে পারার ইতিহাস। অস্ট্রিয়ান ভাষাতাত্ত্বিক উইলহেলম স্মিথ(Wilhelm Schmidt) কে ধন্যবাদ। তার কল্যাণে আমরা অস্ট্রিক ভাষাগোষ্ঠী সম্বন্ধে জানতে পারি। আহমেদ শরীফের প্রবন্ধও এই তথ্যটি পাওয়া যায়। তার উৎস একই হবে।


অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীরা সম্ভবত নৌকা, সংযোগসেতু বা সাঁতরে এশিয়ার দক্ষিণপূর্ব অঞ্চল থেকে এসেছিল। সেটা কত আগের কথা? কমপক্ষে চল্লিশ হাজার বছর আগে। তার পরও কোল-মুন্ডা-খাসি-খুমিক-খেমের এই ভাষাগুলি থেকে সাধারণ একটা ভাষাগোষ্ঠীর অনুমান করতে পেরেছেন স্মিথ। বাংলাতেও এগুলির বিভিন্ন শব্দের অন্তর্ভুক্তি স্বাভাবিকভাবেই ঘটেছে। আমার আগ্রহও ঠিক এ কারনেই। শুধু ভাষা না, দেহের গড়ন-চামড়ার কারনেও এখানকার আদিবাসীদেরকে আপনজনই মনে হয়।


এরিস্টোটল প্রস্তাব করেছিলেন Terra Australis। সেই থেকে ইউরোপের মানচিত্রে দক্ষিণ দিকের অজানা মহাদেশটিকে পাওয়া যায়। আমেরিকা ছিল অজানা, ভারতের নাম ও অবস্থান জানা ছিল, পথ জানা ছিল না। আর অস্ট্রেলিয়ার খোঁজ পায়  প্রকৃতপক্ষে প্রথম ওলন্দাজরা, সপ্তদশ শতকে। ক্যপ্টেন কুকের জন্মেরও একশ বছর আগে।

১৬ই জুলাই, ২০১০