Wednesday, August 17, 2016

যাত্রা পথে বিরতি ও দৈনন্দিনতা

সাতাশ

ভ্রমণ কাহিনী লিখছিলাম, শুরুতে নিজেরই ভালো লাগছিল, আর তা ছাড়া এর মধ্যে রাজনীতি-অর্থনীতি-বিষনীতি ইত্যাদি ঢুকিয়ে দেয়া যাচ্ছিল, প্রথম বিরতি কাশ্মীরে, এরপর বাতালিকের ইতিহাসে ঢুঁ মারতে গিয়ে দেখি ওখানে আলেক্সন্ডার, সেখান থেকে হাতি হয়ে গঙ্গারিদাই, প্রাচীন বাংলার গর্ব, নৃতত্ব, হারারি, গম্ব্রিচ, বিজয়নগর, তুঙ্গাভদ্রার তীর হয়ে গভীর নির্জন পথে। এর মধ্যে পেটের ধান্ধা ইত্যাদি ত বাদ দেয়া চলে না। যাই হোক, পৌঁছে গেলাম তুরতুক। বাগবিভূতির কারণে নামটা মনে ধরেছিল, মানসচক্ষে যা যা অনুমান করছিলাম, তার পুরোটাই যে এমন ছবির মতন দেখতে পাবো তা ভাবিনি। পার্বত্য গ্রাম তুরতুক, মরুর শেষ প্রান্তে। একটা বিশাল পাহাড়ি নদী, উদ্দাম স্রোতে পার্বত্য নির্জনতাকে কটাক্ষ করে, দুর্দম গতিতে ছুটে চলছে। সারাক্ষণ পাথরভাঙ্গার শব্দের মতন বেজে চলেছে নদী। উপরে কারাকোরামের শুভ্র শৃঙ্গ, নিচের দিকে ধুসর, উপত্যকায় দারুণ গ্রাম তুরতুক।

ডাক্তার একটু ক্লান্ত। পাহাড় বেঁয়ে নদীর ওপারের গেস্ট হাউজে যেতে গাইগুই করছিল। "মাহা"  গেস্ট হাউজ। শুনেছিলাম বা পড়েছিলাম একটাই গেস্ট হাউজ, কিন্তু এসে দেখছি আরও হয়েছে এবং হচ্ছে। এখনো পর্যটকদের ওভাবে টের পাওয়া যাচ্ছেনা এই ভালো। গেস্ট হাউজের মালিকের নাম সালমান, জাতে বালতি। তিনতলা বাড়ি একটা, পারিবারিক গেস্ট হাউজ, রুমগুলি বেশ পরিষ্কার, আমরা একটা লাগোয়া টয়লেট রুম পেলাম । ওদের আতিথেয়তার অনুভূতি মিশ্র। দুপুরে কিছু খাইনি। তাই এসেই খাব, এমনটা ভেবেছিলাম। থালির অর্ডার পেতে প্রায় ঘণ্টা পার হয়ে গেল। খাবার খুব বেশি সুবিধার নয়, পাহাড়ি শাক, রাজমাহ আর চাপাতি, ভাত। একটা বিষয় ভালো সেটা হল, পানি রিফিল ফ্রি! লাদাখে পানি খুবই দুষ্প্রাপ্য, এরা বিনামূল্যেই ফিল্টারের জল দিচ্ছে।

 প্রথমে Maha দেখে ভেবেছিলাম বুঝি  হিন্দি "মহা"র রোমানাইজেশন, পরে জানলাম এটা ওদের বংশ পদবি। গোত্রের নাম মাহাপা। মাহাদের গেস্ট হাউজ সংলগ্ন একটা ছোট খাটো সবজি বাগান আছে, ওর পাশেই বেশ কিছু তাঁবু, মনে হলো  টুরিস্ট দের জন্য, পরে জেনেছিলাম, ড্রাইভারদের থাকার জায়গা। গেস্টহাউজের বাগানে লাল টুকটুকে চেরি, ডাক্তারের খুব ছিঁড়তে ইচ্ছে করছিল, নোটিশ লেখা "দয়া করে ছিঁড়বেন না, আমরা জ্যাম বানাই"। নামগিয়াল আসা অবধি মনে হল ফুর্তিতে আছে, প্যাকেট খুলে কি সব তামাক গুড়া সিগারেটের মতন করে ভরছে। গরম জল পাওয়া গেল। আমরা ফ্রেশ হয়ে আরেকটু জিরিয়ে, গ্রাম দেখতে বের হলাম। পাথুরে রাস্তা, পাশ দিয়ে নালার মতন কেটে জলের ব্যাবস্থা, নালাগুলি ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে নিচের দিকে নেমে গেছে।

ক্ষেতগুলির দিকে গেলাম। গ্রামের মেয়েরা শাকসবজির ক্ষেতে কাজ করছে। মুসলিম  প্রধান গ্রাম। কারাকোরামের পাহাড়ের কোলে, ইন্ডিয়ার শেষ গ্রাম। পাহাড়ের ওপারেই পাকিস্তান। তুরতুকের খানিকটা ইতিহাস না জানলেই নয়। তুরতুক ১৯৭১ এর আগে পাকিস্তানের অংশ ছিল, এমন কি এখানকার অধিবাসীদের অনেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতেও কাজ করত। ১৯৭১ এর যুদ্ধের পর এই গ্রামের নিয়ন্ত্রণ আসে ইন্ডিয়ার হাতে। সেই থেকে অধিবাসীদের পাকিস্তানী থেকে ভারতীয় হবার ইতিহাস। আই এস আই এরই মধ্যে জিহাদি অনুপ্রবেশ করানোর চেষ্টা চালিয়েছে। ভারত চেষ্টা করে গেছে নিয়ন্ত্রণ রক্ষার।

তুরতুকের বিকেলটা খুবই চমৎকার ছিল। আমরা একটা সবজি ক্ষেতের কাছে কয়েকটা মেয়ের সাথে কথা বললাম। এরা বালতি এবং খুবই ফর্সা আর টিকানো নাক-চোখ । ওড়না-পর্দার তেমন বালাই নেই, কয়েক জনের মাথায় কাপড় আছে। এর মধ্যে একটা বাচ্চা মেয়ে তার কাঁচা হিন্দি/উর্দুতে আমাকে আর ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করলো, "আপ ক্যায়া পতি-পত্নী হো?" আমি "হ্যাঁ" বলার পর তারা সব হেসে গড়াগড়ি। পথে বেশ কয়েকজন স্থানীয় লোকের সাথে দেখা হল, তারা প্রত্যেকেই স্বাগত সম্ভাষণ জানাচ্ছিলেন। একটা বেড়া দিয়ে ঘেরা সবজি ও ফুলের বাগান পেলাম, ভেতরে যাবার খুব ইচ্ছে হল।

আমাদের পথ করে দিলেন মারজিয়া মাহাপা। মারজিয়ার কাছ থেকে জানা গেলো, "মাহাপা" তাদের গোত্র নাম। বাগানটা চমৎকার। আপেল, এপ্রিকট, চেরি, গাজর, শালগম, বাঁধাকপি, ইত্যাদি আর অনেক ফুলের সমারোহ। মারজিয়া আপা আমাদের ইচ্ছেমতন চেরি ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে বললেন। আমরা সে সুযোগে মহাখুশি। মারজিয়ার দাদীর সাথেও দেখা হল। উনি ক্ষেতে নিড়ানি দিচ্ছিলেন। মারজিয়ার কাছে জানতে পারলাম এই তিন-চার মাস ফসল ফলবে, গম-বার্লি এসব, এরপরে শীত, বছরের বাকিটা সময় শুধুই বরফ। প্রত্যেকটা বাড়ির পাতাল ঘর আছে, সেখানে শীতের মধ্যে গরু-ছাগল রাখার আর সবজি সংরক্ষণের ব্যাবস্থা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, শীতের দিনগুলিতে কি করেন? সারাদিন সূর্যের দেখা পাওয়া যায় না বললেই চলে, শীত মানে শরীর গরম রাখা, আর গ্রীষ্মের জন্য প্রতীক্ষা। এই গ্রীষ্মের বিকেলে কারাকোরামের শীত কেমন হতে পারে, তা কল্পনা কওরা মুশকিল আমাদের জন্য।

মারজিয়ার পরিবারের অনেকেই এখন পাকিস্তানে, পাকিস্তান মানে পাহাড়ের ওপারের গ্রাম। দূরত্ব বড়জোর ৫ কিলো, কিন্তু মারজিয়ার যাবার উপায় নেই। তার চাচাতো ভাইয়েরা পাকিস্তান থেকে বেরাতে এসেছিল, সেই হাজার মাইল দূরের দিল্লি ঘুরে পাসপোর্ট-ভিসা ইত্যাদির মাধ্যমে। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার যেতে ইচ্ছে করে না ? বা ইন্ডিয়াতে কেমন আছো ? উত্তরে বলে, "ইয়েহি আপনি আজাদি হ্যাঁয়!" বুঝলাম আজাদির মানে অন্য কিছু। মারজিয়া ভারতীয়, অন্তত সে তাই মনে করে, তারা সবাই প্রায় শিক্ষিত, এই গ্রামের ৯৪ ভাগ। তার বাচ্চারা লেহতে পড়াশোনা করছে। এখানে সুযোগ-সুবিধা মন্দ নয়। স্কুল আছে, ডাক্তার আছে। ডাক্তারের বাড়ি লেহ, এবং এই প্রত্যন্ত গ্রামে দায়িত্ব সহকারে কাজ করে, বেশ অবাক হলাম, অবশ্য এর আগে জংস্করের পাদুমে বরফ ঢাকা পর্বত অতিক্রম করে গিয়ে স্কুল চালানো সরকারী শিক্ষকদের কথা শুনেছিলাম।

ফেরার সময় ডাক্তার মারজিয়াকে একটা নেকলেছ দিল। মারজিয়া আপা আমাদের কয়েকগোছা গাজর চিবোতে দিলেন। সন্ধ্যে হয়ে আসছিল, আমরা ধীরে ধীরে মাহা গেস্ট হাউজের দিকে ফিরতে লাগলাম। এখানে একটা পুরনো মসজিদ আছে। এখন সংস্কার কাজ চলছে। আমরা ফিরে গিয়ে রাতের জন্য প্রস্তুত হতে লাগলাম। বিদ্যুৎ নেই। স্কুরু থেকে তুরতুকের পথে অনেক টাওয়ার আর তার দেখে ভেবেছিলাম প্রোগ্রেসিভ ইন্ডিয়া তার এই প্রত্যন্ত প্রান্তেও বৈদ্যুতিক ব্যাবস্থা করেছে। এখন বুঝলাম ওগুলি শুধু আর্মির জন্য। ৭ টা থেকে এগারোটা পর্যন্ত জেনারেটর এর লাইন থাকবে। রাতের খাবার আবার রাজমাহ-শাক-চাপাতি।

খাবার সময় একজন স্থানীয়র সাথে আলাপ হলো, সে আমাদের পরিচয় জেনে বললো, গুলশানের "আতঙ্কবাদী" হামলার কথা। এও  জানালো আমরাই নাকি তুরতুকে প্রথম বাংলাদেশী। আমরা খানিক পুলক আর খানিক সন্দেহ নিয়ে রুমে ফিরে এলাম। আগামীকাল আমরা উন্ডার এ থাকবো, খুব বেশি পথ না, তাই সকাল অবধি ঘুমানো যাবে আরাম করে, রুমি-মেইরের সাথে দেখা হলো, ওদেরও তাড়া নেই।
"আমার জানলা দিয়ে আমার পৃথিবী..."


আটাশ

মাহা গেস্ট হাউজের ছাদ থেকে গ্রামের একাংশ দেখা যায়, পুরোটা দেখতে হলে পাহাড়ের উপরের দিকে যেতে হবে। গেস্ট হাউজের মালিক সালমান এর কাছ থেকে পাহাড়ের উপরে পুরনো বৌদ্ধ মনাস্টেরির পথ পাওয়া গেলো। ডাক্তার যাবে না, আধ ঘণ্টা সময় হাতে একাই রওনা দিলাম। প্রথমটা গ্রামের ভেতর দিয়ে। কিছুদূর যেতে একটা পুকুর চোখে পড়লো (রুমি-মেইরের মতে ওটা সুইমিংপুল), এর পাশ দিয়ে উপরে উঠলেই স্কুল। স্কুলের সামনে লম্বাটে মতন খেলার জায়গা। বেশ কিছু বালিকা আমাকে নিয়ে কতক্ষণ মজা করলো। একজন ডেকে বলে, "তোমাকে ডাকে ..." ওদিকে আরেক বালিকা বলে, "আমি না, ঐদিকে উসকি দিদি বুলায়ে ... " দিদিকে পাওয়া গেলো না, একটা সাহসী বালিকা বলেই ফেললো, "তুমহারে পাস আউর নেকলেছ হ্যাঁয়?" বুঝলাম মারজিয়া মাহাপার বদৌলতে এই খ্যাতির বিড়ম্বনা। কোনোমতে এদের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে ছুটলাম। দুধারে এপ্রিকট বন, পেকে হলুদ, গাছ থেকে ঝরে পড়ছে, আমি স্বাদ নেয়ার লোভ সামলাতে পারলাম না, দুর্দান্ত। এর আগে অস্ট্রেলিয়াতে এপ্রিকট টেস্ট করেছিলাম, সেগুলি প্রচণ্ড টক ছিল, পাকা এপ্রিকট কয়েকটা ডাক্তারের জন্য পকেটে পুড়লাম। পাহাড়ি সুন্দর গ্রামগুলি, মনিরত্নমের সিনেমায় দেখা কাশ্মীরি গ্রামের কথা মনে হলো। গ্রামের একদম শেষ মাথায় এসে পড়েছি, একটা বার্লির ক্ষেতে কয়েকজন মহিলা কাজ করছিল। একটা পাথুরে কবরস্থান চোখে পড়লো । প্রথমে বুঝতেই পারিনি। খোপ খোপ দেখে কোন ধ্বংসাবশেষ ভাবছিলাম, কবরস্থান জানার পর মনে হল, ধ্বংসাবশেষ বটে!


কবরস্থান ঘুরে উপরের দিকে বৌদ্ধ মন্দির টা। এখান থেকে প্রায় পুরো গ্রাম টাই দেখা যাচ্ছে । সবদিকে কারাকোরামের শৃঙ্গ, ডানে নদী শয়ক, বায়ে গ্রামটা, হলুদ-সবুজ গম-বার্লির ক্ষেত। দেরী হয়ে যাচ্ছিল, আর একটু হাঁপাতেও শুরু করেছিলাম। ফিরতে হলো। মাহা থেকে সব ব্যাগ ইত্যাদি নিয়ে তুরতুক কে বিদায় জানানোর পালা। জিপ দিয়ে পাহাড় বেঁয়ে নিচে নেমে এলাম, একটা দোকানে মেইর বেশকিছু পানির বোতল কিনলো, আমি কলা কিনে নিলাম। আগের দিনের সেই চেনা রাস্তায় আবার উন্ডারের পথে।

ধূসর পর্বতের মধ্যে দিয়ে জনশূন্য পথ। এ কদিন আমাদের ভাগ্য ভালই বলতে হয়, খারদুংলার অল্প সময় টুকু বাদ দিলে ঝকঝকে আকাশে চকচকে রোদ। স্কুরুর এপারের জগত আর ওপারের মধ্যে বিস্তর তফাৎ। এপাশে শয়কের দুধারে খাড়া-পর্বত উপত্যকা খুব বিস্তৃত নয় বলে জনবসতি হবার মতন সবুজ এর দেখা কম। এপারে নুব্রা আর শয়কের দরুন ভ্যালী বেশ বিস্তৃত। আমরা সোজা যাচ্ছি ডিস্কিটের দিকে, সেখান থেকে পিছনের দিকে উন্ডারে বালিয়াড়ি- তারপর সন্ধ্যার আগে উন্ডারে কোথাও রাত্রিযাপন ।

ডিস্কিটে পাহাড়ের উপর মৈত্রেয় বুদ্ধের এক বিশাল মূর্তি। মৈত্রেয় যেটার উপর বসে আছে সেটাই মন্দির। একপাশে কারাকোরাম, আরেক পাশে বিস্তৃত নুব্রা উপত্যকা, শয়ক আর নুব্রা বিধৌত বালিয়াড়ি, কাঁটা ঝোপের বন, ডিস্কিট গুম্ফা, আর শুভ্র নীলাকাশে মৈত্রেয়র উর্ধ্বশির। মন্দির যথারীতি বীভৎস, শিষ্যদের দেয়া সয়াবিন এর বোতলগুলি এর চেয়ে আকর্ষণীয়। পাটাতনের উপরে আমরা বেশ খানিকটা সময় জিরিয়ে নিলাম।

"মৈত্রেয় যেটার উপর বসে আছে সেটাই মন্দির"

এখান থেকে নেমে ডিস্কিট গুম্ফাতে যাব ভাবছিলাম, ড্রাইভার নামগিয়ালের মেজাজের কারণে তা আর হয়ে উঠলো না। তার কিছু একটা হয়েছে আজকে। শুকনো ছাইপাঁশ কিসব টানছিল, সেগুলির প্রভাব হবে। মেজাজ চড়া। আমরা ডিস্কিটেই দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম। দুর্দান্ত সুস্বাদু ছাগলের মাংসের ফ্রাইড রাইছ, ডাক্তার এগ ফ্রাইড রাইছ। কি মনে করে এক মগ কফিও গিলে ফেললাম।

নুব্রার বালিয়াড়ি তে পৌঁছে দেখা পেলাম দুই কুঁজ ওয়ালা ব্যাক্ট্রিয়ান ক্যামেলের। প্রাচীন সিল্ক রুটে ভারত এর সাথে মধ্য এশিয়া তথা ব্যাক্ট্রিযার পথে ব্যাবহৃত হত এসব উট। সিল্করুট পরিত্যাক্ত হবার পর অনেক অনেক বছর এরা নুব্রার জঙ্গলে ঘুরে বেড়িয়েছে। এখানে জঙ্গল কাঁটাঝোপের, আর কিছু নেই, উটের জন্য আদর্শ। এক কালের পোষ মানানো উটের দল বনে ফিরে গিয়ে বন্য হয়েছে, এখন আবার এদের কে ধরে এনে পোষ মানিয়ে পর্যটনের কাজে লাগানোর চেষ্টা চলছে। পাঁচশর মতন উট নাকি এখনো নুব্রার এই জঙ্গলে চড়ে বেড়াচ্ছে, পোষ মানানো গেছে গোটা চল্লিশেক। আমরা এক জম্মুবাসীর সাথে পরিচিত হলাম, নাম রাকেশ। উটে চড়ে খানিক ক্ষণ বালিয়াড়ির মধ্যে ঘোরাফেরা হলো। মরুজাহাজে অনেক ছোট বেলায় ঢাকা চিড়িয়াখানাতে একবার উঠেছিলাম। এরপর এখানে। ডাক্তার পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে উঠেছিল।

এ জায়গাটা বেশ ভিড়। যা বুঝলাম উণ্ডারের পরে, অর্থাৎ তুরতুকের দিকে ভারতীয় পর্যটকের ভিড় কম।  রুমি-মেইর উটের পিঠে উঠলো না, তারা একটু টায়ার্ড মনে হলো। আমরা হিমালয়ান গেস্ট হাউজ নামের একটা জায়গায় উঠলাম। নামগিয়াল আমাদের নামিয়ে দিয়ে পরের দিন সকালে ৮ টার দিকে আসবে বলে কোথায় জানি গেলো।