Friday, January 07, 2011

ওলো সখি তোর নয়ন কেন অমন লাজুক লতা লো...

আমাদের চট্টগ্রাম, আমাদের সূর্যসেন, আমাদের প্রীতিলতা...কে নিয়ে সিনেমা, খেলেঙ্গে হাম...

বড় আশা করে সিনেমাটা দেখতে বসেছিলাম, আশুতোষ গোয়াড়িকরের “স্বদেশ” দেখার স্মৃতি মধুর ছিল, সেই ছিলো ভরসা।

প্রথমেই বলে নেয়া যাক, দৃশ্যায়ন চট্টগ্রামে হয় নি, তাতে কিছু আসে যায় না অবশ্য, পরিচালক সেটের মধ্যে চট্টগ্রাম তৈরি করুন, তাতে কোন বাঁধা নেই। দেবদাস দেখতে গিয়ে একটা বিষম ব্যাপার চোখে পড়েছিল, পরিচালক হিন্দী-বাংলা মিলিয়ে এক অদ্ভুত টোন তৈরী করেছিলেন, অনেকের কাছেই এটি ‘আকর্ষনীয়’ মনে হতে পারে, আমার একেবারেই হজম হয় নি। হজম হয় নি এইখানেও, মাঝে মাঝে বাংলা ঢুকিয়ে দেয়ার ব্যাপারখানি, বাপু গোটা টাই বাংলাতে কর, না পারলে দুইটা ভার্সন কর। সবাইকে দিয়ে বাংলা বলানো কেন? চাঁটগাঁয়ের সূর্যসেনের মুখে হিন্দি শুনতেও ভালো লাগে না, আবার বোম্বের মামুদের ভুল উচ্চারণের বাংলাও সহ্য হয় না। অভিষেক বচ্চনের অভিনয়ের কথা নাই বললাম। তিনি সব পারেন। বাপের সম্পত্তি!


দৃশ্য এক

প্রীতিলতা আর কল্পনা দত্তের প্রথম দৃশ্য। শুরুটাই গান। “কিউ সখী তেরে ন্যায়ন ঝুকে ঝুকে...” শুরু করে দীপিকা পাডুকোন(তাও ব্যাডমিন্টনের ব্যাট হাতে!), জবাবে লাজুক লতা প্রীতিলতাও কম যাবেন কেন? “কিউ রি সাখী তেরা ভি তো...”!

প্রীতিলতার মরমে জেলফেরত নির্মল সেনের জন্য প্রেম-প্রীতি জন্ম নিতেই পারে, কিন্তু তাই বলে ইন্ট্রু সিনে এই দশা? তাহলে, এই প্রেম-প্রীতি থেকেই বিপ্লবের প্রতি প্রেম-প্রীতি জন্মালো লাজুক-লতা প্রীতিলতার। “দর্শন পড়া”র চেয়ে “প্রেমে পড়া” বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রীতিলতা চরিত্রে অভিনয় করা নায়িকার অভিনয়ের যা ছিরি! তার চেয়ে ব্যাডমিন্টন পাডুকোন ভালো। পুরোটা জুড়ে কল্পনা দত্তের কাছে নয় দীপিকা পাডুকোনের কাছে ম্লান হয়ে গেছেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার।


দৃশ্য দুই

“কংগ্রেস ও আমাদের লক্ষ্য এক, কিন্তু পন্থা ভিন্ন...” – হা কপাল! এই বুঝেছেন ও বুঝাতে চাচ্ছেন আশুতোষ! এমন ভাবে দেখানো হলো, মনে হচ্ছিল, বিপ্লবী সংগঠনগুলি কংগ্রেসেরই গুপ্ত সহযোগী সংগঠন। সাধু! সানি দেওলের মাথায় এর চেয়ে বেশি ঘিলু আছে বলে মনে হয়।


দৃশ্য তিন

“কবে যে স্বাধীনতা আসবে? কবে যে আমি আবার গোলাম হয়ে যাবো?” – বিপ্লবী নির্মল সেন প্রীতিলতার গোলাম হবেন। প্রীতিলতা আরেক কাঠি সরেস, “আবার স্বাধীনতা চাইবো না তো আমরা?”(বিবাহোত্তর সম্পর্কের প্রতি ইঙ্গিত বোধ করি) অর্ধেক সিনেমা জুড়ে ধরণের উচ্চ-মার্গীয় সংলাপের ছড়াছড়ি! প্রেম দেখানোটা সমস্যার না, কিন্তু এ কি উপায়, কে লিখছে এইগুলি? “তুমি কলকাতা গিয়ে বোম বানানো শিখে এসো...” এর উত্তরে কল্পনা দত্ত বলেন, “আমি তোমাকে ছেড়ে যেতে পারবো না...” আহা উহু...জবাব নেই।

এর পর আর পারি নাই দেখতে, তার চেয়ে এই লিঙ্কগুলি গুরুত্বপূর্ণঃ প্রীতিলতা, কল্পনা দত্ত

2 comments:

Swakkhar Shatabda said...

কই যামু! এই লিঙ্কেও ভুল; প্রীতিলতা দর্শনের ছাত্রী ছিলেন... :(

Unknown said...

ছবিটা দেখার ইচ্ছা আমারও ছিল। তোর সমালোচনা পড়ে
সেটা চলে গেল। বাংলা আর হিন্দী মিশ্রিত ভাষা যেটাকে 'বান্দী' বলা যায়, ওটা আমারও অপছন্দ। দেবদাসের উদাহরণটা যথার্থ।