Wednesday, March 18, 2009

ইচ্ছামৃত্যু ও ভীষ্মের শরশয্যা

নন্দিনীকে চুরি করার শাস্তি ভোগ করতে হলো প্রভাসকে। শাস্তি হলো মর্ত্যে মানে এই পৃথিবীতে জন্ম নিতে হবে মরণশীল মানুষ হয়ে। যখন দেবব্রত হয়ে জন্ম হলো তখন বোধ করি পূর্বের স্মৃতি শান্ত্বনার কাজে আসে নি(বেদনার চেয়ে কম নয়)।


ভীষণ প্রতিজ্ঞায় বর লাভ হলো, "ইচ্ছামৃত্যু"। আগেই তা নির্ধারিত ছিল। এর মাঝে কি এক ভীষণ কল্যাণকামী প্রতিজ্ঞায় বিধি ভোগের অধিকারটুকু পর্যন্ত রহিত করল। তাই বুঝি সম্ভব হয়েছিল শরশয্যা! নচেৎ রাজ্যহীন, স্ত্রী-সন্তান বিহীন হয়ে এই ভীষণ পৃথিবীতে বাস করার মত প্রতিজ্ঞা হয়ত কুরুক্ষেত্রে ধর্মনাশের কারণ হয়ে দাঁড়াত।


গ্রীক পুরাণে দেখি সিসিফাস। দেবতাদের গোপন সত্য চুরি করায় সেও অভিশপ্ত। তার জন্যও পাতালপুরীর শাস্তি। উত্তরায়ণ পর্যন্ত প্রভাস-গাঙ্গেয়-দেবব্রত-ভীষ্ম, পাঁচ প্রজন্মের সাড়ে তিনশত বৎসর। তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হলো মৃত্যুর। সিসিফাস মৃত্যুকে বন্দী করেছিল, আর ভীষ্মের কাছে ছিল মৃত্যুর নিয়ন্ত্রক, তবু দুজনের কাছেই জীবন-জগত এবসার্ডের নামান্তর। সিসিফাসের পাথর গড়িয়ে যায়, আর ভীষ্মকে সইতে হয় ভোগহীন জীবনজ্বালা-শিখন্ডীর স্ত্রীহস্তের প্রহার-ধনঞ্জয়ের তীব্র বাণ।

স্ত্রীর ভালোবাসার পরীক্ষা নিতে গিয়ে সিসিফাস বিপথে, নন্দিনীর জন্য প্রভাস।

No comments: