খেলাঘর
আমার কৈশোরের একটা স্মৃতি আছে “খেলাঘর আসর” সংক্রান্ত। কোনো এক শরৎকালের বিকেলগুলিতে মেতে ছিলাম। মফস্বলের সেই অবসর সময়গুলি কতই না মধুর ছিলো। আমরা দল বেঁধে গান শিখতাম চন্দনদার কাছে, চন্দনদা এখন আমেরিকাতে। বাকীরাও প্রায় হারিয়েই গেছে। হারিয়ে গেছে নীল জিন্সের শার্ট পরা শিউলি নামের কিশোরী, যার জন্য আমার বালক বয়সের কিছু আবেগ জমা হয়ে আছে। সুবিনয়কে খুব ভালভাবে চিনতাম না। বন্ধুত্ব, প্রেম, ঈর্ষা সবকিছুই যেন ছিলো খেলা। ছোট্ট একটা মাঠ ছিলো, পাশে রূপাদের প্রকান্ড আমগাছ। এখন কিছুই নেই, খেলাঘর আসরও আর টিকেনি।
শিক্ষায়তন ছাড়া অবধি কিছুকাল আমার ঘোরের মধ্য দিয়ে গেছে। স্বাধীনতার পর্বতসম কর্তব্যবোধের ভারে ন্যুব্জ হয়ে যাচ্ছি। বিশাল কর্মযজ্ঞের মধ্যে প্রায় “ব্রাত্য কাঙাল”-এর মতো অবস্থান আমার। এ মহাজীবন যা ছিলো চিরকাঙ্ক্ষিত, অথচ ঠিক আমিই যেন অপাংক্তেয়। আমি অভিনয় পটু নই, তবে চলতে চলতে অনেকটা পথ পাড়ি দেয়া হয়ে গেছে। বর্তমানকে ধারণ করবার অক্ষমতার সাথে সাথে আবিষ্কার করছি আমার ভয়ংকর একরূপ-যা সচেতন-অসচেতনভাবে আমারই সৃষ্টি। নিজস্বতার অভাব খুবই প্রকট হয়ে ধরা দিচ্ছে প্রায় সবখানে।
“……………………………………..
তোমরা ব্যস্ত, তোমরা ব্যস্ত, তোমরা ব্যস্ত,
তোমরা বড্ড বেশি ব্যস্ত
অথচ আমি তো আজীবন তোমাদেরই দিকে যেতে চাই।
কেন যেতে চাই!” --- (শহীদ কাদরী)।
খেলতে খেলতে কখনো মনে হয়নি পৃথিবীটা কোনো খেলাঘর নয়। এখানে ঈর্ষা, প্রেম, বন্ধুত্ব, ষড়যন্ত্র কতো বাস্তব! রূঢ়তার আঘাতে মুমূর্ষু হয়ে চোখ মেলে দেখি, খেলাঘর ভেঙ্গে গিয়েছে। কতগুলি স্বপ্ন, কতগুলি রোমান্টিক মুহুর্তের ভগ্নাংশ মাত্র অবশিষ্ট। আবার জোড়া লাগাতে হবে, আবার গড়তে হবে এই খেলাঘর।
2 comments:
plz how can i read ur bangla posts
http://www.somewhereinblog.net/banglasettings
here you find something for bangla
Post a Comment